খতিয়ানে বা রেকর্ডে ভুল হলে আপনার করনীয়

 জমি জমার সমস্যা ইদানিং বেড়েই চলছে। আজকে জানাব 



খতিয়ানে বা রেকর্ডে ভুল হলে আপনার করনীয়

চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত খতিয়ানে বা রেকর্ডে ভুল থাকলে করনীয়: রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর 145A ধারার 6 উপধারা অনুসারে, চূড়ান্ত রেকর্ডের গেজেট প্রকাশের তারিখ হতে পরবর্তী ১ (এক) বছরের মধ্যে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কর্তৃক ল্যাণ্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে মামলা করা যায়।

এই আইনের 145A ধারার 7 উপধারা অনুসারে, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে মামলা করতে বিলম্বের কোন বিশেষ কারণ জানালে এবং ট্রাইবুনালে তা গ্রহণ করলে মামলা করার জন্য পরবর্তী আরো ১ (এক) বছর অর্থাৎ চূড়ান্ত রেকর্ডের গেজেট প্রকাশের তারিখ হতে পরবর্তী মোট ২ (দুই) বছরের মধ্যে মামলা করা যায়।

আপিলঃ এই আইনের 145B ধারার 6 উপধারা অনুসারে, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের যে কোন রায়ে সংক্ষুব্ধ পক্ষ রায় প্রদানের পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইবুনালে আপিল করা যায়। এই আইনের 145B ধারার 7 উপধারা অনুসারে, ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইবুনালে আপিল করতে বিলম্বের কোন বিশেষ কারণ জানালে এবং ট্রাইবুনাল তা গ্রহণ করলে আপিলের সময় উত্তির্ণের পরবর্তী আরো ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে অর্থাৎ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের রায় প্রকাশের তারিখ হতে পরবর্তী মোট ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে আপিল করা যায়।


DP খতিয়ানে কোন ভুল-ত্রূটি পরিলক্ষিত হলে করনীয়:

ভূমি জরিপের মাধ্যমে রেকর্ড প্রস্ততের সময় কতকগুলো ধাপ পার করতে হয়। যেমন খানাপুরী, বুঝারত, তসদিক ইত্যাদি। এসব ধাপ পার করার পর খসড়া খতিয়ান বা DP খতিয়ান (Draft Publication) প্রকাশ করা হয়। এ সময় রেকর্ডে কোন প্রকার ভুলভ্রান্তি থাকলে তা আপত্তি ও আপীলের মাধ্যমে সংশোধন করা যায়।

DP খতিয়ানে কোন ভুল-ত্রূটি পরিলক্ষিত হলে বা এ সম্পর্কে কারও কোন আপত্তি বা দাবি থাকলে, সরকার নির্ধারিত ফরমে ৪০ টাকার কোর্ট ফি দিয়ে আপত্তি দায়ের করা যাবে। এটিই ৩০ বিধির আপত্তি। এই পর্যায়ের সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা হলেন সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার বা উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার বা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার। দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণে এটি একটি বিচারিক কার্যক্রম। পক্ষগণ নিজে অথবা নিজেদের মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজ নিজ দাবি আপত্তি অফিসারের কাছে উত্থাপন করতে পারেন। দাখিলকৃত আপত্তি কেসগুলো নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার বাদী-বিবাদী পক্ষের বক্তব্য শুনবেন ও বিশ্লেষণপূর্বক রায় প্রদান করবেন। আপত্তি অফিসার প্রয়োজন মনে করলে খতিয়ান ও নকশা সংশোধন, পরিবর্তন বা পূর্বাবস্থায় বহাল রাখার বিষয়ে রায় প্রদান করবেন এবং অবশ্যই রায় মোতাবেক রেকর্ড সংশোধন করবেন।

জরিপ ব্যবস্থায় আপীল হচ্ছে খতিয়ান ও নকশা সংশোধনের সর্বশেষ স্তর। আপত্তি কেসের রায়ের প্রেক্ষিতে কোন পক্ষ সংক্ষুদ্ধ হলে তিনি প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩১ বিধি অনুসারে রায় প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত ফি প্রদান করে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট আপিল করতে পারেন। আপীল আবেদনের সাথে আপত্তি কেসের রায়ের কপি দাখিল করতে হবে। সেটেলমেন্ট অফিসার বা তার মনোনীত অন্য কোন আপিল অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিশ প্রদান করে শুনানীর মাধ্যমে দ্রুত আপিল নিষ্পত্তি করবেন। সর্বশেষ আপিল রায় মোতাবেক খতিয়ান ও নকশা সংশোধন করা হয়।

মোঃ রোকনুজজামান

আইনজীবী

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ।

শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url